ঠান্ডা ও কুয়াশায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব : বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা

জি এম মুজিবুর রহমান  ঃ দেশে শীত জেঁকে বসেছে। শীতের প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত হতে চলেছে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় আশাশুনির কৃষিখাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ক্ষেতের অবস্থা দেখে ও শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকায় কৃষকদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে।
কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় প্রকৃতি ঢেকে যাচ্ছে। কখনো কখনো হিমেল বাতাসের সঙ্গে দেখা দিচ্ছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মত কুয়াশা। দেখা মিলছে না রোদের। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে ওঠার সাথে সাথে ঠান্ডা ও কুয়াশা কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। শীতকালীন সবজি আলু, পেঁয়াজ, টমেটো ক্ষেত নিয়ে কৃষকদের মাঝে দুঃচিন্তা ও উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।
শীতকালীন সবজি ক্ষেত নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন। আবার অনেক স্থানে আগাম জাতের আমের মুকুলও ঝরে যাচ্ছে। কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়েও চিন্তাগ্রস্থ কৃষকরা। তীব্র শীতে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে বোরোর বীজতলা। চারার গোঁড়া বা পাতা পচা রোগ এবং হলুদ বর্ণ ধারণ করে বীজতলা দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাছাড়া সূর্যের আলো ঠিকমতো পাচ্ছেনা বীজতলা। আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। বৃষ্টি হলে ছত্রাক-বাহী ব্লাষ্ট রোগের সংক্রমণ হতে পারে। এতে করে আলু ও টমেটোর অনেক ক্ষতি হবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, শীত ও ঘন-কুয়াশার কারনে আলু ক্ষেতের বাড়তি পরিচর্যা করছেন কৃষকরা। আলু ক্ষেতে বালাইনাশক স্প্রে করছেন কৃষকরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া এবং তাপমাত্রায় ঘন ঘন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কখনো তীব্র শীত, কখনো ঘন কুয়াশা আবার কখনো শৈত্যপ্রবাহও দেখা দিচ্ছে। এতে শিম, লাউ, করলা, মিষ্টি কুমড়া, আলু, শাকসবজিসহ বিভিন্ন কৃষি খেত নষ্ট হচ্ছে। ফসলের পরাগায়ন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ফলন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শীত ও কুয়াশা থেকে রক্ষা পেতে অনেক কৃষক বিকেল থেকেই বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন। কোথাও কোথাও বীজতলার চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। বৈরী আবহাওয়া ও কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রাকৃতিকভাবেই বীজতলার ক্ষতি হবে। চারার বৃদ্ধিতে নিম্ন তাপমাত্রার প্রভাব কমাতে ঘন-কুয়াশা ও বেশি শীতের কারনে  বোরো ধানের বীজতলা সকাল দশটা থেকে সাদা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে সন্ধ্যার আগে তা সরিয়ে ফেলান হচ্ছে। আবার সন্ধ্যায় পানি সেচ দিয়ে বীজতলার চারা ডুবিয়ে দিয়ে এবং সকালে সেই পানি বের করে দিচ্ছে। এবং সকালে দড়ি টেনে দিয়ে বীজতলার চারায় জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিচ্ছে। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করে ধানের বীজতলা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে কৃষকরা।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, জেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ্ব মত আমরা কৃষকদেরকে ঠান্ডার ক্ষতি হতে বীজতলা রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে। পরিথিনের ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং রোগ দেখা দিলে ছত্রাক নাশক ব্যবহারের পরামর্শও দেয়া হয়েছে।





সম্পর্কিত সংবাদ

  • আশাশুনিতে বিনা চাষ ও চাষকৃত জমিতে সরিষা আবাদ, দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলে সুশোভিত
  • শ্যামনগর হাটে-বাজারে ভেজাল সারে সয়লাব উৎপাদন হচ্ছে ব্যহত, প্রতারিত হচ্ছে কৃষক।
  • আশাশুনিতে শাক-সবজী বীজ বিতরণ ও চাষী প্রশিক্ষন
  • ইউসিবি’র ‘ভরসার নতুন জানালা’ উদ্যোগের আওতায় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পেলেন শেরপুরের ১৬০ কৃষি-উদ্যোক্তা
  • ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে কৃষকের রক্ত চুষেছে
  • আশাশুনিতে ৪৮ কৃষককে  কৃষি সামগ্রী বিতরণ
  • চুয়াডাঙ্গার ১৫০ কৃষি উদ্যোক্তার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ আয়োজন