■ পবিত্র আল-কুরআনে বর্ণিত কাহিনীঃ ঐতিহাসিক আসহাবে কাহাফের ঘটনা এবং আমাদের জন্য শিক্ষা!!

নিউজ  ডেস্ক  ::

পবিত্র আল-কুরআনে আল্লাহ্ তা’আলা যে সমস্ত ঘটনা উল্লেখ করেছেন, তার প্রত্যেকটি ঘটনাতেই আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। কিন্তু আমাদের অনেকেই সেই ঘটনাগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যাতে করে শিক্ষণীয় বস্তুগুলো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে না। বক্তাগণ এ সমস্ত ঘটনা বলে শ্রোতাদেরকে কখনও হাসান, আবার কখনও কাঁদান ঠিকই, কিন্তু যেই উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ্ ঘটনাগুলো উল্লেখ করেছেন, সেই সুমহান উদ্দেশ্যগুলো অনেক ক্ষেত্রেই অস্পষ্টই থেকে যায়!

■▪কুরআনে বর্ণিত আসহাফে কাহাফ বা গুহাবাসীর আশ্চর্যজনক ঘটনাও কুরআনে বর্ণিত শিক্ষণীয় অন্যান্য সব ঘটনাসমূহের মধ্যে একটি অন্যতম ঘটনা। আসুন আমরা তাফসীরে ইবনে কাছীর এবং কাসাসুল কুরআনের আলোকে এই শিক্ষণীয় ঘটনা এবং তার শিক্ষণীয় সকল বিষয়গুলো জেনে নেই।

■■ ঘটনাঃ
সেই যুগে কোন এক ঈদের/উৎসবের দিন জনগণ মূ|র্তি পূজার অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে বের হল। এতে তারা তাদের
মূ|র্তিগুলোর নৈকট্য লাভের জন্য পশু য|বাই বা অন্যান্য যা যা করার তাই করবে। কিন্তু তাদের সম্ভ্রান্ত এবং সম্মানিত বংশের একজন যুবক মূ|র্তি পূ{জার এই মহড়া কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা যে সমস্ত কল্পিত মা|বুদের উপাসনা করছিল, তা দেখে তিনি বিবেকের কাছে থমকে দাঁড়ালেন। সন্দেহ তাঁর মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তাঁর চিন্তা ও চেতনায় এক নতুন গতির সঞ্চার হল। তিনি জন সমাবেশ ত্যাগ করে চুপ করে বের হয়ে গেলেন। একটি গাছের নীচে গিয়ে পেরেশান হয়ে বসে রইলেন।

কিছুক্ষণ পর তার মতই আরেকজন যুবক এসে তার সাথে বসে পড়লেন। তার মনেও একই সন্দেহ। এক এক করে সেখানে সাতজন যুবক এসে একত্রিত হলেন। সকলের মনে প্রশ্ন একটাই। নিজ হাতে গড়া কাঠের ও পাথরের মূ|র্তি কি করে আমাদের মা|বুদ হতে পারে? কল্যাণ-অকল্যাণের ক্ষমতাই বা কোথায় পেল তারা? যিনি এই সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, এই আকাশ-বাতাস সবকিছু তৈরী করেছেন, যিনি আমাদের জীবন ও ম|রণের একমাত্র মালিক, তাঁকে বাদ দিয়ে এগুলোর ইবাদত কি করে সম্ভব!?

এই সাতজনের মধ্যে কোন প্রকার র|ক্তের সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ঈমানের বন্ধনে তাঁদের একজন অন্যজনের সাথে আটকে গেলেন। তাঁরা সকলেই এক বাক্যে পরস্পরের নিকট জাতির লোকদের মূ|র্তি পূজা ও শি|র্কের প্রতি মনের সন্দেহের কথা প্রকাশ করলেন। অতঃপর তাঁরা মহা বিশ্বের মাঝে তাদের প্রখর দৃষ্টি ঘুরালেন। এতে তাঁদের অন্তরসমূহ তাওহীদের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠল এবং আল্লাহর মনোনিত দ্বীনের সন্ধান পেয়ে তাঁদের আত্মা এক অনাবিল প্রশান্তি লাভ করল।

তাঁরা সকলেই ঈমান গোপন রাখার উপর একমত হলেন। কারণ তাঁদের বাদশাহ ছিল মূ|র্তি পূজক এবং মু|শরিক, যে তার প্রজাদেরকে শি|রক করতে বাধ্য করত। তাঁরা সমাজের অন্যান্য লোকদের সাথে একত্রেই বসবাস করতে থাকলেন। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকেই যখন একাকী হন, তখন আল্লাহর ইবাদতের দিকে মনোনিবেশ করেন।

কোন এক রাতে তাঁরা যখন একত্রিত হলেন, তখন তাঁদের একজন নীচু আওয়াজে এবং পূর্ণ সতর্কতার সাথে বললেনঃ
——-“হে আমার বন্ধুগণ! গতকাল আমি একটি খবর শুনেছি। এটি যদি সত্য হয়, (আমার ধারণাও তাই) তাহলে অচিরেই আমাদেরকে আমাদের দ্বীন হতে ফিরিয়ে রাখা হতে পারে অথবা আমাদের জীবন নাশ করা হতে পারে। আমি শুনলাম, আমাদের ব্যাপারটি এখন আর বাদশাহর কাছে গোপন নয়! আমাদের দ্বীন ও আকীদাহর বিষয়টি এখন তার কাছে অস্পষ্ট নয়! যেই দ্বীনকে আমরা হৃদয়ে গেঁথে নিয়েছি এবং যা আমাদের চিন্তা-চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে, তা এখন বিপন্ন/ধ্বং|স হওয়ার পথে। সুতরাং তোমরা চিন্তা কর এবং তোমাদের সিদ্বান্ত তোমরাই গ্রহণ কর।”

দ্বিতীয়জন বললেনঃ
——-“খবরটি আমিও শুনেছি। তবে তা মু|নাফি|ক এবং অজ্ঞদের অপপ্রচার মনে করে উড়িয়ে দিয়েছিলাম! এখন খবরটির সত্যতা প্রমাণিত হলো!”

তাঁরা সকলে মিলে বললেনঃ
——“আমরা আমাদের দ্বীনের উপর অবিচল থাকবো। যে বিপদই আসুক না কেন, তা মাথা পেতে মেনে নিবো। মহান আল্লাহর সত্য দ্বীনকে জানার পর কোনভাবেই পূর্বের সেই মূ|র্তি পূ|জার দিকে ফেরত যাবো না।”

গুজব এখন সত্যে পরিণত হল। বাদশাহ তাদের খবরটি জেনে ফেলল। তাদেরকে ঘর থেকে বের করে বাদশাহর দরবারে হাজির করা হল। বাদশাহ বললঃ
——-“তোমরা তোমাদের ব্যাপারটি গোপন রাখতে চেষ্টা করেছ। কিন্তু সফল হতে পার নি! আমি ঠিকই তা জানতে পেরেছি যে, তোমরা বাদশাহ এবং তার প্রজাদের ধর্ম ত্যাগ করেছ। তোমরা এমন এক নতুন ধর্মে প্রবেশ করেছ, যে সম্পর্কে আমি জানি না! কোথা থেকে তা তোমাদের আসল? আমি তোমাদেরকে কখনই এভাবে ছেড়ে দিবো না। আমি জানি তোমরা সম্ভ্রান্ত বংশের লোক। তাই অন্যরা তোমাদের কারণে বিভ্রান্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কা যদি না থাকত তাহলে তোমাদেরকে বাঁধা প্রদান করতাম না! যাই হোক, আমি তোমাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করতে চাচ্ছি না। তাই তোমরা চিন্তা কর, হয় তোমরা আমার ধর্মে ফেরত আসবে, অন্যথায় তোমাদের মাথাগুলো দেহ থেকে বি|চ্ছিন্ন হবে!”

কিন্তু তাঁদের অন্তরগুলোকে আল্লাহ মজবুত করে দিলেন। ঈমানকে শক্তিশালী করে দিলেন। তারা বললেনঃ
——-“হে বাদশাহ! আমরা এই দ্বীনে কারও অন্ধ অনুসরণ করে প্রবেশ করি নি, বাধ্য হয়েও নয় এবং অজ্ঞাত বশতঃও নয়। আমাদের সুস্থ বিবেক এবং ফিতরাত আমাদেরকে ডাক দিয়েছে। আমরা সেই ডাকে সাড়া দিয়েছি। বিবেক আমাদেরকে আলোকিত করেছে। তার আলোতেই আমরা চলছি। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তার কোন শরীক নেই। আমরা তাঁকে ছাড়া আর অন্য কাউকেই ডাকবো না। আর আমাদের জাতির লোকেরা অন্ধ হয়ে অন্যের তাকলীদ করে মূ|র্তি পূজা করছে, যে ব্যাপারে তাদের কাছে কোন দলীল- প্রমাণ নেই। এই হল আমাদের শেষ কথা। এখন আপনার যা খুশী করতে পারেন।”

এরপর বাদশাহ বললঃ
——-“এবার যাও। আগামীকাল অবশ্যই আসবে। আমি তোমাদের ব্যাপারে ফয়সালা প্রদান করবো।”

তাঁরা ফিরে এসে পরামর্শ করতে লাগলেন এবং প্রত্যেকেই স্বীয় মতের চাকা ঘুরাতে লাগলেন। তাঁদের মধ্যের একজন বললেনঃ
—–“বাদশাহ যেহেতু আমাদের ব্যাপারটি জেনেই ফেলেছে, তাই তার ধমকি এবং হু|মকির মধ্যে থেকে আমাদের কোন লাভ নেই। আমরা ঐ গুহার দিকে দ্বীন নিয়ে পালিয়ে যাবো। যদিও তা হবে এই প্রশস্ত দেশের তুলনায় খুব অন্ধকার এবং সংকীর্ণ। কিন্তু আমরা সেখানে প্রশস্ত মনে এক আল্লাহর ইবাদত করতে পারবো, যা আমরা এই বিশাল রাজ্যে পালন করতে পারছি না। এমন দেশে আমাদের বসবাস করাতে কোন কল্যাণ নেই, যেখানে আমরা নিরাপদে আমাদের আকীদাহ-বিশ্বাস অনুযায়ী দ্বীন পালন করতে পারি না এবং এমন দেশে আমাদের বসবাস করা ঠিক হবে না, যেখানে আমাদের সঠিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অন্য একটি বাতিল মত চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে!”

সুতরাং তাঁরা সকলেই এই কথায় একমত হয়ে গেলেন। তাঁরা সফর সামগ্রী তৈরী করে নিজ নিজ দেশ ছেড়ে এক অজানা পথের উদ্দেশ্যে স্বীয় দ্বীন নিয়ে হিজরত শুরু করলেন। পথে একটি কুকুরও তাঁদের সাথী হয়ে গেল। একই পথে সেও চলতে লাগল এবং তাঁদের সাথে ভালবাসার বন্ধনে আটকে গেল এবং তাদের প্রহরী হওয়ার দায়িত্ব পালনে নিজেকে নিজেই মনোনিত করল।

ভালকে ভালবাসলে এবং সৎ লোকের সাহচর্যে গেলে মহান আল্লাহর প্রিয় হওয়া যায়, এই প্রাণীটি হয়তবা তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিল। পথ চলতে চলতে এক সময় তাঁরা একটি গুহায় পৌছে গেলেন। হয়তোবা সেখানে তারা মহান আল্লাহর দেয়া রিযিক থেকে ফল-ফলাদি পেয়ে গেলেন এবং ঝর্ণার পরিচ্ছন্ন মিষ্টি পানি পান করলেন। দীর্ঘ পথ চলার পর সফরের ক্লান্তি দূর করার জন্য পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে সেখানে তারা সামান্য বিশ্রামের নিয়তে গুহার মধ্যকার যমীনে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন। শুয়ে পড়ার সাথে সাথেই হালকা ঘুম অনুভব করলেন এবং সেই হালকা ঘুমের পথ ধরেই গভীর নিদ্রা চলে আসল।

পরের দিন নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরা বাদশাহর দরবারে হাজির না হওয়াতে বাদশাহর লোকেরা তাঁদের অনুসন্ধানে বের হল। এমন কি তারা সেই গুহার দরজা পর্যন্ত পৌঁছে গেল। কিন্তু হিজরতের পথে যেমন মক্কার মু|শরি|করা রসূল সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর(রাঃ)এর সন্ধানে বের হয়ে গারে ছাওর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েও অন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আল্লাহ তা’আলা সেভাবেই তাদেরকে অন্ধ করে দিলেন।

এখানেই ঘটে গেল মহান আল্লাহ তা’আলার এক বিষ্ময়কর ঘটনা। দিনের পর আসে রাত। রাতের পর দিন। পার হয়ে গেল বছরের পর বছর। যুবকগণ শুয়ে আছেন। গভীর নিদ্রা তাদেরকে আচ্ছন্ন করে আছে। বাইরের কর্ম ব্যস্ত জীবনের সাথে তাঁদের কোন সম্পর্ক নেই, আকাশে বিজলীর গর্জন, বাতাসের প্রচন্ডতা এবং পৃথিবীর কোন ঘটনাই তাঁদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। সূর্য উদিত হওয়ার সময় ডান পাশে হেলে গিয়ে গুহার ছিদ্র দিয়ে সামান্য আলো প্রবেশ করে এবং আল্লাহর হুকুমে তাঁদেরকে সামান্য আলো এবং তাপ প্রদান করে। কিন্তু সূর্যের প্রখর উত্তাপ তাতে প্রবেশ করে না।

আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁদের শরীরকে হিফাযতের জন্য অস্ত যাওয়ার সময়ও সূর্য একটু বাম দিকে হেলে যায়। কুকুরটি তার দুই বাহু প্রসারিত করে বীরের মত প্রহরীর কাজে গুহার বাইরে অবস্থানরত। তারা সেখানে মাঝে মাঝে ডানে বামে পার্শ্ব পরিবর্তন করছেন।

কে আছে এমন যে, এই দৃশ্য দেখে ভয় পাবে না? গভীর নিদ্রায় তিনশ নয় বছর পার হয়ে গেল! এবার তাঁরা ক্ষুধা এবং পিপাসায় দুর্বল শরীর নিয়ে জাগ্রত হলেন। তাঁরা ভাবলেন সময় বেশী অতিক্রম হয়নি এবং ইতিহাসের চাকা গুহার মুখেই থমকে রয়েছে। তাঁদের একজন বললেনঃ
——-“হে বন্ধুগণ! আমার মনে হয় এখানে আমরা দীর্ঘ সময় ঘুমিয়ে পার করেছি। তোমাদের মতামত কি?”

অন্য একজন বললেনঃ
——-“আমার মনে হয়, পূর্ণ একদিন আমরা নিদ্রিত ছিলাম। কারণ যে ধরণের ক্ষুধা এবং পিপাসা আমরা অনুভব করছি, তাতে তাই মনে হয়।”

তৃতীয়জন বললেনঃ
——-“সকালে ঘুমিয়েছি। এই দেখো সূর্য এখনও ডুবে যায় নি। আমার মনে হয় একটি দিবসের কিয়দাংশই আমরা নিদ্রায় অতিক্রম করেছি।”

চতুর্থজন বললেনঃ
——-“ছাড়ো এ সব মতভেদ। আল্লাহ পাকই ভাল জানেন, আমরা কতকাল এখানে ঘুমিয়েছি। মূল কথা হচ্ছে, আমার প্রচুর ক্ষুধা অনুভব হচ্ছে। মনে হচ্ছে কয়েক দিন যাবৎ না খেয়ে আছি। আমাদের একজনের উচিত এখনই শহরে গিয়ে কিছু খাদ্য ক্রয় করে নিয়ে আসা। তবে তাকে অবশ্যই সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, লোকেরা যদি আমাদের অবস্থান সম্পর্কে জেনে ফেলে তবে তারা আমাদেরকে হ|ত্যা করতে পারে। কিংবা আমাদেরকে ফিতনায় ফেলে দ্বীন পালন থেকে বিরত রাখতে পারে। তাকে আরেকটি বিষয়ে সাবধান হতে হবে, কোনভাবেই যেন হা|রাম খাদ্য ক্রয় করা না হয়। সে জন্য সে যাচাই-বাছাই করে হালাল খাদ্যটিই ক্রয় করবে।”

অবশেষে তাদের মধ্যে একজন সাবধানতা ও পূর্ণ সতর্কতার সাথে ভী|ত-স|ন্ত্রস্ত অবস্থায় শহরে প্রবেশ করলেন। তিনি দেখলেন কোন কিছুই আর আগের মত নেই! ঘরবাড়িগুলো পরিবর্তন হয়ে গেছে! পুরাতন পরিত্যাক্ত ঘরের স্থলে বিশাল প্রাসাদ শোভা পাচ্ছে। আগের রাজপ্রাসাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি এখন যে সমস্ত চেহারা দেখছেন সেগুলো পরিচিত কোন লোকের চেহারা নয়! নদীর স্রোত আগের মতই বয়ে চলছে, পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে সকল ঘরবাড়ি ও বন-বনানী ঠিকই আছে। শুধু নেই আগের সেই মানুষগুলো। তাঁর দৃষ্টি বিচলিত হল, এদিক সেদিক চোখ ঘুরানোতে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করতে লাগল এবং তাঁর চলার ভঙ্গিতে মানুষের সন্দেহ দানা বেঁধে উঠল!

পরিশেষে লোকেরা তাঁকে ঘিরে ধরল। উপস্থিত লোকদের একজন তাকে জিজ্ঞেস করলঃ
——“আপনি কি এখানে অন্য কোন দেশ থেকে এসেছেন? এত চিন্তা করছেন কি নিয়ে? অনুসন্ধানই বা করছেন কী?”

তিনি বললেনঃ
——“আমি এখানে অপরিচিত কেউ নই! আমি কিছু খাদ্য ক্রয় করতে চাই। কিন্তু কোথায় তা বিক্রি হচ্ছে আমি তা জানি না। একজন লোক তার হাত ধরে খাদ্যের দোকানে নিয়ে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি রূপার তৈরী কয়েকটি দিরহাম বের করলেন। দোকানের মালিক দিরহামগুলো হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলেন। এটা তো তিনশ বছরের অধিক সময় আগের তৈরী! সে ভাবল এই ব্যক্তি হয়ত কোন গুপ্তধন পেয়েছেন। সম্ভবতঃ এই দিরহামগুলো ছাড়াও তার কাছে আরো বিপুল পরিমাণ দিরহাম রয়েছে। দোকানের মালিক বাজারের লোকদেরকে ডেকে একত্রিত করল এবং তাঁকে চারদিক থেকে আটকে দিলো।

এবার গুহাবাসী লোকটি বললেনঃ
——-হে লোক সকল! দেখুন! আপনার যা ভাবছেন, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। আর এই মূদ্রাগুলো লুকায়িত অসংখ্য সম্পদের কোন অংশ নয়। গতকাল মানুষের সাথে কোন এক লেনদেনের সময় তা আমার হস্তগত হয়েছে। আর এই তো আজ আমি তা দিয়ে কিছু খাদ্য ক্রয় করতে চাচ্ছি। আপনারা তাতে এত আশ্চর্যবোধ করছেন কেন? এর কোন কারণ তো আমি খুঁজে পাচ্ছি না! আর কেনই বা সন্দেহের উপর নির্ভর করে আমার বিরুদ্ধে গুপ্তধন পাওয়ার এবং তা লুকিয়ে রাখার অপবাদ দিচ্ছেন?”

এই কথা বলে তাঁদের ব্যাপারটি মানুষের কাছে প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার ভ|য়ে তিনি স্থান ত্যাগ করতে চাইলেন। কিন্তু লোকেরা কিছুতেই তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হল না। ভিড় ভেঙ্গে দিয়ে কিছু লোক একাকী তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলতে লাগল। কথা-বার্তার এক পর্যায়ে তাঁরা যখন জানতে পারল যে, তিনি হচ্ছেন তিন শত নয় বছর পূর্বে জা|লেম ও কা|ফির বাদশাহর পাকড়াও থেকে পলায়নকারী সম্ভ্রান্ত বংশের সাত জন যুবকের মধ্যের একজন, তখন তারা আরও আশ্চার্যান্বিত হলো।

তারা আরও জানতে পারল যে, তারা হলেন ঐ সমস্ত যুবক যাঁদের অনুসন্ধানে বাদশাহ সকল প্রচেষ্টাই করেছিল, কিন্তু তাঁদের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নি! যুবকটি এবার আরও শ|ঙ্কিত হয়ে পড়লেন। কারণ এখন লোকেরা তাদের সকল ব্যাপারটি জেনে ফেলেছে। তাই তিনি নিজের ও তাঁর অন্য সব সাথীদের জীবন নাশের ভ|য়ে পালাতে উদ্যোত হলেন।

লোকদের মধ্যে হতে একজন বললঃ
——-“হে ভাই! তুমি কোন ভ|য় করো না। তুমি যে জা|লিম বাদশাহর ভ|য় করছ, সে তো প্রায় তিনশ বছর আগেই ধ্বং|স হয়েছে! এখন যিনি এই রাজ্যের বাদশাহ, তিনি আপনি এবং আপনার সাথীদের মতই একজন মুমিন বান্দা। এবার বলুন, আপনার অন্যান্য সাথীগণ কোথায়?”

যুবকটি এবার আসল ঘটনা জানতে পারলেন। ইতিহাসের সেই দীর্ঘ দূরত্বও তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন, যা তাঁকে মানব সমাজ থেকে আলাদা করে রেখেছে। তিনি বুঝতে পারলেন, এখন তিনি মানুষের মাঝে চলমান একটি ছায়া ব্যতীত আর কিছুই নন!

এরপর তিনি লোকদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ
——“আমাকে গুহার অভ্যন্তরে বন্ধুদের কাছে যেতে দাও। আমি তাঁদেরকে আমার এবং আপনাদের অবস্থা সম্পর্কে সংবাদ দেব। তারা দীর্ঘক্ষণ যাবৎ আমার অপেক্ষায় বসে আছেন। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তারা আমার ব্যাপারে চিন্তিত আছেন।”

তখনকার বাদশাহও তাদের খবরটি জেনে ফেললেন। তিনি গুহাবাসীদের সাথে সাক্ষাত করার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে উঠলেন এবং দ্রুত গুহার দিকে চলে আসলেন। তিনি তাঁদের সবাইকে উজ্জল চেহারায় জীবিত অবস্থায় দেখতে পেলেন। তাঁদের সাথে মুসাফাহা ও আলিঙ্গন করলেন। তিনি তাঁদের সবাইকে রাজপ্রাসাদে আসার জন্য আহবান জানালেন এবং তথায় স্থায়ীভাবে বসবাসের আমন্ত্রণ জানালেন।

তাঁরা সাফ জানিয়ে দিলেনঃ
——-“নতুনভাবে জীবন যাপনে আমাদের কোন আগ্রহ নেই। আমাদের ঘরবাড়িগুলো বিলীন হয়ে গেছে, পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্তদির কেউ জীবিত নেই এবং আমাদের মাঝে এবং স্বাভাবিক জীবন-যাপনের মাঝে দীর্ঘ দিন যাবৎ কোন যোগসূত্রও নেই। সুতরাং এই পার্থিব জীবনের দিকে ফিরে গিয়ে আর লাভ কি?”

অতঃপর তাঁরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের আবেদন করলেন, তাঁর কাছে ফেরত যাওয়াকেই পছন্দ করলেন এবং তাঁর প্রশস্ত রহমাত দ্বারা তাঁদেরকে ঢেকে নিতে প্রার্থনা করলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ঘুমের কোলে ঢলে পড়লেন। দেহ থেকে তাঁদের প্রাণ চির দিনের জন্য বের হয়ে গেলো!!

■■ ️এই ঘটনা থেকে আমাদের জন্য কতিপয়
শিক্ষাঃ
■▪০১) তাওহীদকে মেনে নেওয়া মানুষের ফিতরাতি তথা সৃষ্টিগত স্বভাব। অর্থাৎ কোন মানুষকে যদি তার স্বভাজাত ধর্মের উপর ছেড়ে দেয়া হয় এবং বাইরের কোন গো|মরাহ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাকে বিভ্রান্ত না করে, তাহলে সে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিবে, তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর ইবাদতে অন্য কিছুকে শরীক করবে না। যেমনটি হয়েছেলি ঘটনায় বর্ণিত যুবকদের ক্ষেত্রে।
■▪০২) পৃথিবীতে তাওহীদ প্রতিষ্ঠায় যুবকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
■▪০৩) মূ|র্তি পূজা, অলী-আওলীয়াদের ক|বর পূ|জা এবং শি|র্কের পক্ষে কোন দলীল নেই।
■▪০৪) প্রয়োজনে সত্য গোপন করা জায়েয আছে। কিন্তু তা সকল সময়ের জন্য নয়।
■▪০৫) সাহসের সাথে তাওহীদের বাণী প্রকাশ্যে প্রচার করা জরুরী।
■▪৬) নিজ দেশে দ্বীন পালন করতে গিয়ে ফিতনার কোন ভ|য় থাকলে দ্বীন নিয়ে পলায়ন করা আবশ্যক।

■▪০৭) আসহাবে কাহাফের এই ঘটনা আল্লাহর বিশেষ একটি বড় নিদর্শন। তবে তার চেয়েও বড় নিদর্শন হচ্ছে, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্যের সৃষ্টি এবং দিবা রাত্রির আগমণ ও প্রস্থান।
■▪০৮) বিপদাপদে একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং তাঁর দয়া কামনা করা জরুরী।
■▪০৯) কোন মতবাদ এবং আমল গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কারও অন্ধ অনুসরণ না করে সঠিক এবং পরিপূর্ণ দলীল অনুসন্ধান করা জরুরী।
■▪১০) আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর বান্দাদের খেদমতের জন্য বড় বড় মাখলুককে বাধ্য করেন।
■▪১১) একজন দাঈ প্রয়োজনে অতি সতর্কতা অবলম্বন করবেন। বিশেষ করে যখন তাঁর পিছনে শ|ত্রুরা ষ{ড়যন্ত্র শুরু করে।
■▪১২) সুখে-দুঃখে সর্বাবস্হায়ই হালাল রুজী অনুসন্ধান করা জরুরী।

■▪১৩) চিন্তা ও গবেষণা করে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত ঘটনাগুলো অধ্যয়ন করা উচিৎ।
■▪১৪) বিনা প্রয়োজনে মতভেদ করা অর্থহীন। যেমন, গুহাবাসীদের নাম, কুকুরটির নাম এবং তার রং সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করে কোন লাভ নেই!
■▪১৫) ভবিষ্যতে কোন কাজ করতে ইচ্ছা করলে প্রথমে ইন শা-আল্লাহ্ বলতে হবে।
■▪১৬) প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সত্যের উপর অবিচল থাকার গুরুত্ব অপরিসীম।
■▪১৭) আসহাবে কাহাফের স্থান এবং কাল কুরআন ও সহীহ হাদীছে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। সুতরাং তা খুঁজে বেড়ানোতে আমাদের কোন লাভ নেই। ঘটনাটি ঐ প্রকার গায়েবের অন্তর্ভূক্ত, যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর নাবীকে জানিয়েছেন। তবে তার স্থান ও কাল আমরা জানতে পারি নি।
■▪১৮) নাবী কারীম সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েবের সকল খবর জানতেন না। যদি জানতেন, তাহলে অহীর অপেক্ষায় না থেকে প্রশ্ন করার সাথে সাথেই তাদের কে ঘটনাটি বলে দিতেন।

■▪১৯) আসহাবে কাহাফগণ যে গুহাটির মধ্যে অবস্থান করেছিলেন, তাও গায়েবের অন্তর্ভূক্ত। এর ঠিকানা আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেন না। কেউ যদি এর স্থান নির্দিষ্ট করে বলে সে, আল্লাহর নামে মি|থ্যা রচনাকারীর অন্তর্ভূক্ত হবে।
■▪২০) কারামতে আওলীয়া সত্য। তাতে বিশ্বাস করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদাহর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত।
■▪২১) তাওহীদ ও শি|র্কের মধ্যে পার্থক্য করার যোগ্যতা অর্জন করা জরুরী। অন্যথায় তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা সম্ভব নয়।
■▪২২) তিন শত নয় বছর পর তাঁদেরকে জীবিত করা এটাই প্রমাণ করে যে, মৃ|ত্যুর পর পুনরুত্থান সত্য, কি|য়ামত সত্য এবং এতে কোন সন্দেহ নেই।
■▪২৩) রূহ এবং দেহ উভয়েরই পুনরুত্থান হবে। কেননা আসহাবে কাহাফগণ এভাবেই জীবিত হয়েছিলেন।
■▪২৪) র|ক্তের সম্পর্কের চেয়ে ঈমানের সম্পর্ক অধিক মজবুত হওয়া আবশ্যক। ঘটনায় বর্ণিত যুবকদের মধ্যে
র|ক্তের কোন সম্পর্ক না থাকলেও ঈমান ও তাওহীদের বন্ধনে তারা আবদ্ধ হয়ে একই পথের পথিক হয়ে যান।

■▪২৫) হেদায়াত আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর বান্দার প্রতি বিরাট একটি নি’আমত। বান্দার উচিত সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে হেদায়াত প্রার্থনা করা।
■▪২৬) ঘরের মধ্যে কু|কুর রাখা নিষিদ্ধ। তাই কু|কুরটিকে গুহার বাইরে রাখা হয়েছিল।
■▪২৭) ভাল লোকের সঙ্গে থাকলে ভাল হওয়া যায় এবং ভাল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া যায়। কু|কুরটি তাঁদের সাথে থাকার কারণে কুরআনে সেটির কথা উল্লেখিত হয়েছে। অপর পক্ষে অসৎ লোকের সঙ্গে থাকলে অসৎ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে নিরাপদ নয়।
■▪২৮) ক|বরের উপর মসজিদ বা গম্বুজ নির্মাণ করা আমাদের শরীয়তে নিষিদ্ধ।
■▪২৯) বাতিল পন্থীরা সন্দেহ এবং অনুমানের অনুসরণ করে থাকে। কারণ, সঠিক কোন দলীল তাদের হাতে নেই।
■▪৩০) বয়স বৃদ্ধি হলে এবং অভিজ্ঞতা দীর্ঘ হলেই মানুষ জ্ঞানী হয়ে যায় না। এই যুবকগণ বয়সে কম হলেও তাঁরা সত্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছেন। অথচঃ সেই জাতির মধ্যে অসংখ্য বয়স্ক ও অভিজ্ঞ লোক থাকা সত্ত্বেও সঠিক পথের সন্ধান তারি পায় নি।

■▪৩১) এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে সূর্য চলমান; স্থির নয়। কেননা, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
——-“তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডানদিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বামদিকে চলে যায়।”
■▪৩২) প্রহরী হিসেবে কু|কুর প্রতিপালন করা জায়েয আছে।
■▪৩৩) কোন বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে তা আল্লাহর দিকে সোপর্দ করে বলতে হবে আল্লাহই ভাল জানেন।
■▪৩৪) আল্লাহ্ কখনও দ্বীনের দাঈদের ঈমানী শক্তি পরীক্ষা করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে শ|ত্রুদেরকে শক্তিশালী করে দেন। তখন দাঈদের উচিত ধৈর্য ধারণ করা।
■▪৩৫) তারা সংখ্যায় ছিলেন সাত জন। কারণ আল্লাহ্ তা’আলা প্রথম দু’টি সংখ্যার প্রতিবাদ করে তৃতীয়টির ক্ষেত্রে কিছুই বলেন নি। এতে বুঝা গেল শেষ সংখ্যাটিই সঠিক।
■▪৩৬) যে ব্যক্তি ফতোয়া দেয়ার যোগ্য নয়, তার কাছে ফতোয়া চাওয়া ঠিক নয়।

■■ এছাড়াও আরও অসংখ্য শিক্ষণীয় দিক আছে উক্ত ঘটনায়। যা হয়ত একজন দু’জন মানুষের দ্বারা বের করা সম্ভব নয়। তাই আপনাদের নিকট অনুরোধ, যদি উক্ত ঘটনা থেকে আপনার নিকট বিশেষ কোন শিক্ষণীয় দিক বের হয়ে থাকে, তবে তা নিচে মতমতের ঘরে উল্লেখ করে দিবেন। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

●● ইয়া আল্লাহ্ তা’আলা! আমাদের সবাইকে সঠিক এবং পরিপূর্ণ ভাবে জানার, বোঝার, মেনে চলার ও আমাদেরকে পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীনের উপর অবিচল থাকার তওফীক দান করুন এবং আমাদের সবাইকে ক্ষমা, কবুল এবং হিফাযত করুন এবং আমাদেরকে সুস্থ্য, সুন্দর, নিরাপদ এবং ভালো রাখুন(আ-মীন)।। ❤️💖❤️

●[[২৭/১১/২০২৪ খৃস্টাব্দ ● ১২/০৮/১৪৩১ বঙ্গাব্দ]]●
●[[২৪/০৫/১৪৪৬ হিজরী ● গ্রুঃ/পোঃ-০০৩]]●






সম্পর্কিত সংবাদ

  • কর্মক্ষেত্রে যেসব বিষয় লক্ষ রাখা জরুরি
  • কর্মক্ষেত্রে যেসব বিষয় লক্ষ রাখা জরুরি
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নতুন মহাপরিচালক রেজানুর রহমান
  • আজকের নামাজের সময়সূচি (৩১ অক্টোবর ২০২৪)
  • সচ্চরিত্রবানরা নবীজির কাছাকাছি থাকবে
  • হজের প্রাথমিক নিবন্ধন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে
  • নামাজ না পড়লে যে শাস্তি