নিউজ ডেস্ক :: রাজবাড়ীতে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা হয়ে পানিবন্দি হয়ে রয়েছে রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার। বাড়িতে পানি জমে থাকায় গবাদী পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ড্রেন দিয়ে পানি বের হতে না পারার কারণেই এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভবানীপুর লাল মিয়া সড়ক কবরস্থানের সামনে থেকে রাস্তার পাশদিয়ে একটি সরু ড্রেন করা হয়েছিল। যেখান দিয়ে ভবানীপুর মিলপাড়া, কবরস্থান, বড়লক্ষীপুর-ড্রাই আইস ফ্যাক্টরির পেছনের মাঠের পানি বের হতো। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ড্রেনের উৎসমুখ বন্ধ করে দিয়েছে। যেটুকু ড্রেন খোলা আছে তা ময়লা আবর্জনা ও মাটি পড়ে ভরে গিয়েছে।
শহরের শহীদ খুশি রেলওয়ে মাঠের পাশে ময়লার স্তুপের কারণে ড্রেন দিয়ে আর কোন পানি বের হচ্ছে না। এ কারণে বৃষ্টির পানি আটকে গত এক মাস ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।গত দুই-তিন দিনের বৃষ্টিতে পানি আরও বেড়ে ভবানীপুর মিলপাড়া এলাকার শতাধিক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। বাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়দের বাড়িতে চলে গেছেন।
কেউ কেউ গৃহপালিত পশু গরু-ছাগল নিয়ে রেল লাইনে আশ্রয় নিয়েছে। নোংরা ও পঁচা পানিতে চলা ফেরার কারণে অনেকের হাত পায়ে ঘাঁ দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবানীপুর কবরস্থানের সামনে দিয়ে একটি সরু ড্রেন রয়েছে। ড্রেনের উৎসমুখ বালু ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ড্রেনের শেষ মাথা পান্না চত্বর ইউমার্কেটে এসে শেষ হয়েছে।
ইউমার্কেট সংলগ্ন ড্রেনের শেষ মাথায় ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমে পানি আটকে গেছে। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভবানীপুর গ্রামের মিলপাড়া এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার সবগুলো বাড়ির চারপাশে থৈ থৈ পানি জমেছে। নিচু বাড়িঘরে ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করেছে। কেউ কেউ বাড়িতে প্রবেশ করার জন্য বাঁশের সাঁকো বানিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করছেন।
পানিবন্দি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি এখানে ত্রিশ বছর ধরে বসবাস করছি। কিন্তু এ রকম জলাবদ্ধতা কখনও হয়নি। ড্রেনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে পানি বের হতে পারছে না। আমরা এলাকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছি। গরু-ছাগল নিয়ে আমরা আপাতত রেল লাইনে উঠেছি। রান্না করে খাবার খাওয়া বন্ধ। পানির মধ্যে চলাচল করার কারণে হাত পায়ে ঘাঁ হয়ে যাচ্ছে। চুলকানিসহ বিভিন্ন রোগবালাই দেখা দিচ্ছে।
রেললাইনে এসে সময় কাটাই।’মারজান নামে এক গৃহবধু বলেন, ‘বাড়ির ভেতর হাটু পানি। আসা যাওয়া করা যায় না। রাস্তাঘাট সব পানির নিচে। পানি অতিরিক্ত নোংরা। নামতেও ঘৃণা করে। তাও নামতে হচ্ছে। আমরা এর পরিত্রাণ চাই।’ আব্দুর রহিম ডাবলু বলেন, ‘ভবানীপুরের এই ড্রেনটি পরিষ্কার না করার কারণে বৃষ্টি নামলেই এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমার বাড়ির চারপাশে পানি।
বাড়ি থেকে বের হতে হলে হাটু পানি ভেঙে বের হতে হয়। আমরা প্রথম শ্রেণির পৌরসভার বাসিন্দা। অথচ পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়ে আছি। আমাদের এই পানির সমস্যা হতে দ্রুত সমাধান চাই।’রাজবাড়ী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এএইচএস মো. আলী খান বলেন, ‘রাজবাড়ীর বেশির ভাগ ড্রেনই অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল
। অনেক ডোবাই ভরাট হয়ে গেছে। সে কারণে এখন আর পানি বের হতে পারছে না। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ডোবাগুলো উদ্ধার করা গেলে পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।’
সূত্র: দেশ রূপান্তর নিউজ