আনন্দ-বেদনা আর অনুপ্রেরণার ইত্যাদি

নিউজ ডেস্ক::দর্শকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রচারিত হলো শেরপুরে ধারণ করা ইত্যাদি। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিজয়, প্রায় এক হাজার তাজা প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা পরবর্তী সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এক সংগ্রামের মধ্যদিয়ে গঠিত নতুন সরকারের শাসনামলে প্রচারিত হলো ইত্যাদি।

তবে এর ধারণ যখন হয় তখনো ছাত্র আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠেনি। পুরো অনুষ্ঠানেই দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও সময়োপযোগী নানা বিষয়ের সমন্বয়ে চেনারূপেই নির্মিত হয়েছে এটি। শেরপুরের মধুটিলায় এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বনভূমির মাঝখানে নির্মিত মঞ্চে ইত্যাদি ধারণের জন্য হানিফ সংকেতকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।

দেশের দুর্গম জায়গাগুলোতে গিয়ে অনুষ্ঠান ধারণ সম্ভব নয় বলে যারা গ্রামাঞ্চলে কোনো সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চান না, তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে তিনি দেখিয়ে দিলেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে গারো পাহাড়ের পাদদেশেও অনুষ্ঠান করা সম্ভব।

বিষয় বৈচিত্র্যে সাজানো ইত্যাদির নাট্যাংশগুলোতে সবসময়ই তুলে ধরা হয় সামাজিক আর পারিবারিক অসঙ্গতি। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। শেরপুরের পরিচিতি পর্বটি ছিল বেশ তথ্যসমৃদ্ধ, যা থেকে স্বল্প পরিচিতির এই অবহেলিত জেলাটি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা গেল।

জানা গেল সেন্টু হাজং-এর মতো প্রচারবিহীন এক কৃষিকর্মীর কথা যাকে হয়তো কৃষি বিজ্ঞানী বললেও অতিকথন হবে না।

গানের কথা আর সুরে শেরপুরের পরিচিতি তুলে ধরে যে নৃত্যটি পরিবেশিত হলো তা ছিল মনোমুগ্ধকর। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমাজের এক শ্রেণির মানুষের আর্থিক বৈভব দেখানোর জন্য সামান্য হাঁস বা ছাগলের মতো প্রাণীও যে কারও কারও কাছে বিত্তবানের পরিচয় বহন করে তা নিয়ে ছিল একটি তীর্যক নাট্যাংশ।
আর একটি নাট্যাংশে ছেলের বিয়ে দিতে গিয়ে পাত্রী পছন্দের ক্ষেত্রে অবৈধ সম্পদের প্রতি জনগণের ঘৃণা আর প্রত্যাখ্যানের চিত্র উঠে এসেছে চমৎকারভাবে। চার নারী অভিনেত্রীর স্বামীদের পরিচিতির মাধ্যমে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ চারটি পেশার মানুষের আসল চরিত্র তুলে ধরে রসাত্মক উপস্থাপনাটি ভালো লেগেছে।
ভালো লেগেছে কুপি বা চেরাগ বাতির সংগ্রাহকের ব্যতিক্রমধর্মী সংগ্রহ সম্পর্কে পরিচিতি তুলে ধরে আমাদের অতীত দিনের বাস্তবতা তুলে ধরার জন্য। ইত্যাদিতে এমন বিরল প্রতিভা আর শিল্পী বা সংগ্রাহকদের পরিচিতি তুলে ধরে ইত্যাদি একটি মহান দায়িত্ব পালন করছে।
এবারের দর্শক পর্বের পুরো বিষয়টি ছিল স্থানীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একটি অসাধারণ উপস্থাপনা। প্রত্যন্ত এলাকার বাংলা ভাষাভাষী দর্শকদের সঙ্গে গারো, হাজং এবং কোচ সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে অনিমেষ রায়ের সংগীতসূত্রে দর্শকদের পরিবেশনা ছিল প্রাণবন্ত।
সব ধরনের জাতিগোষ্ঠী আর সম্প্রদায়ের মিলনমেলার উপস্থাপনা আমরা দেখতে পাই একমাত্র ইত্যাদিতে। পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝেই যে অঞ্চলটিতে আমরা হাতি আর মানুষের সহাবস্থান ও বিবাদের কথা শুনি, দেখি হাতির তাণ্ডবের চিত্র, আবারো দেখি জনগণের আক্রোশের শিকার হয়ে হাতির মৃত্যু পর্যন্ত, সেই বিষয়টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ইত্যাদিতে।
হাতির আক্রমণে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন দিনমজুর নুর ইসলাম। ইত্যাদির এবং বনবিভাগের পক্ষ থেকে এই পরিবারকে ৫ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। আর বিদেশি পর্বে চীনের মহাপ্রাচীরের সামনে, উপরে, নিচে দাঁড়িয়ে যখন উপস্থাপক বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন মনে হচ্ছিল প্রাচীন আমলের সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম চীনের মহা প্রাচীরের মতো বাংলাদেশের টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ইতিহাসে ইত্যাদিও যেন দাঁড়িয়ে আছে একাশ্চর্য্য হয়ে।

সূত্র :মানবজমিন ডেস্ক

 

 



« (পূর্ববর্তী সংবাদ)



সম্পর্কিত সংবাদ

  • অভিনেতা গোবিন্দ গুলিবিদ্ধ ,হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে
  • জাভেদ জানালেন : সালমান-আমির ও শাহরুখের মধ্যে কে সেরা!
  • মা চান প্রথম স্বামীর সঙ্গেই থাকি: সানাই
  • অমিতাভের ওপর যে কারণে বিরক্ত হয়েছিলেন দোকানি
  • ‘বিশ্বাস করতে চাই আলো আসবেই’
  • বুবলীর নতুন সিনেমা ‘নীল টিপ’, নায়ক ছোটপর্দার
  • নবান্নে গিয়ে মমতাকে কী বলে এলেন ঋতাভরি
  • আত্মহত্যা করেছেন মালাইকার বাবা