দেবহাটায় ২১টি পূজা মন্ডপে রং-তুলির কাজে সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

এমএ মামুন :: দেবহাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে বেশ তোড়জোড়ে। প্রতিমা রং-তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এ বছর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ২১ টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা।

পঞ্জিকা মতে, ২ অক্টোবর মহালয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্তলোকে বেজে উঠবে দেবীর আগমনী বার্তা। ৮ অক্টোবর দেবী দুর্গার মর্তে আগমনী বার্তায় দেবীর বোধন পূজা। ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দেবীর দুর্গার নবপত্র কম্পারম্ভ। ওইদিন  মন্ডপে  মন্ডপে   বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের শব্দ। ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী পূজা। ১১ অক্টোবর দেবীর মহাঅষ্টমী প‚জা। ১২ অক্টোবর মহানবমী পূজা। দশমী বিহিত পূজ্য সমাপনান্তে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হবে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার ধর্মীয়া আচার-অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দেবহাটা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, দেবহাটার ২১ টি পূজা মন্ডপের মধ্যে কুলিয়া ইউনিয়নে ০৭টি, পারুলিয়া ইউনিয়নে ০৭টি, সখিপুর ইউনিয়নে ০২টি, নওয়াপাড়া ইউনিয়নে ১টি ও দেবহাটা ইউনিয়নে ০৪টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।

পূজা মন্ডপ গুলোর মধ্যে রয়েছে- ১নং কুলিয়া ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, হিজলডাঙ্গা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, বহেরা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, কুলিয়া ঘোষপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পশ্চিমপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পূর্বপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ ও সুবর্নাবাদ সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, ২নং পারুলিয়া ইউনিয়নের উত্তর পারুলিয়া চারা বটতলা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, দক্ষিন পারুলিয়া জেলেপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, সন্ন্যাসখোলা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, নোড়ারচক সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, বড়শান্তা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, মাঝ পারুলিয়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ ও উত্তর কোমরপুর সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, ৩নং সখিপুর ইউনিয়নের উত্তর সখিপুর পালপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, কোঁড়াঁ পাকড়াতলা সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, ৪নং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের গাজীরহাট সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ এবং ৫নং দেবহাটা সদর ইউনিয়নের দেবহাটা বাজার সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা ফুটবল মাঠ সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, টাউনশ্রীপুর সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ ও টাউনশ্রীপুর পালপাড়া সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ ।
প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রতিমা নির্মাণের কাজ শেষ। এখন চলছে রং তুলির কাজ। ইতোপূর্বে আমরা রং-তুলি হাতে কাজ করেছি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মেশিন দিয়ে কাজ করছি। এতে সময় অনেক কম লাগছে। তবে এ বছর প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমা নির্মাণের খরচ একটু বেশি হচ্ছে বলেও জানান তারা।

গাজীরহাট মন্দির কমিটির সভাপতি শরৎচন্দ্র ঘোষ জানান, মন্দিরে পুলিশের প্রশাসন সর্বদা নজরদারি রেখেছেন। এছাড়া সকল মন্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হচ্ছে।

উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চন্দ্র কান্ত মল্লিক জানান, ধর্মীয় উৎসব শান্তিপ‚র্ন ভাবে পালন করতে জামাত-বিএনপি নের্তৃবৃন্দরা পূজা উদযাপন কমিটির নের্তৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় করেছেন। আমরা মনে করি এবছর উৎসব মূখর পরিবেশে এ উৎসব সফল ভাবে সুসম্পন্ন হবে।

দেবহাটা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অজয় কুমার ঘোষ, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা। ধর্মীয় বেড়াজাল পেরিয়ে অনুষ্ঠানটি সামাজিক উৎসবে রুপ নেয়। এ উৎসবকে সফল ভাবে সুসম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগীতা একান্তভাবে কামনা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব শান্তিপূর্ন ভাবে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন ও তদারকি করছি। দেবহাটা উপজেলার ২১টি পূজা মন্ডপের মধ্যে প্রতি বছরই দক্ষিণ পারুলিয়া জেলেপাড়া সর্বজনিন দূর্গা পূজা মন্ডপ, সখিপুর পালপাড়া সর্বজনিন দূর্গা পূজা মন্ডপ, গাজীরহাট সর্বজনিন দূর্গা পূজা মন্ডপ, বালিয়াডাঙ্গা সর্বজনিন দূর্গা পূজা মন্ডপ ও দেবহাটা ফুটবল মাঠ সর্বজনিন দূর্গা পূজা মন্ডপ গুলোতে দর্শনার্থীদের আগমন একটু বেশি লক্ষ করা যায়। তাই এ সকল মন্ডপ গুলোতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সাথে সাথে প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ইদ্রিসুর রহমান জানান, জনসমাগমপূর্ন মন্ডপ গুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মন্ডপের আশে পাশে ও মাঠে গ্রামপুলিশ, আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব সহ বিভিন্ন বাহিনী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে। তাছাড়া পুলিশের টহল অব্যাহত রাখা হবে। এছাড়া সকল মন্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনসহ সর্বস্তরের নের্তৃবৃন্দের সহযোগিতায় বিগত বছরের ন্যায় এবারের পূজাও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।

 






সম্পর্কিত সংবাদ

  • দেবহাটায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী
  • দেবহাটায় ঘূর্ণিঝড় ডানা মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা
  • দেবহাটায় সাংবাদিক লিটনের উপর হামলা : থানায় অভিযোগ দায়ের
  • দেবহাটায় জামায়াতের যুববিভাগের ফুটবল টুুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
  •   মহান আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে দেশ শান্তিপূর্ন ভাবে গঠিত হবে:মুহাদ্দিস রবিউল বাশার
  • সভাপতি খায়রুল, সম্পাদক উজ্বল, সাংগঠনিক কবির
  • দেবহাটায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া
  • ইছামতিতে বাংলাদেশ-ভারতের নিজ সীমানায় প্রতিমা বিসর্জন