জাপানের রাস্তাঘাটে ডাস্টবিন দেখা যায় না কেন?

নিউজ ডেস্ক:: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার জন্য বিশ্বে জাপান বেশ পরিচিত। যারা প্রথমবার সেখানে ঘুরতে যান, তারা অনেকটাই অবাক হন কীভাবে দেশটি এত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন!
তবে একটি বিষয় দর্শনার্থীদের বেশি অবাক করেছে, তা হলো দেশটির রাস্তাঘাটে কোনো জায়গায় ডাস্টবিন দেখা যায় না।

এটি অন্যান্য মানুষের কাছে বিস্ময়কর বলে মনে হতে পারে; তবে জাপান বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।জাপানিদের একটি নিজস্ব ধর্ম আছে, তা হলো ‘শিনতো’।

এর মূল মর্মবাণীই হল পরিচ্ছন্নতা। দেশটিতে কোনো আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন না থাকার একটি কারণ হলো লোকেরা তাদের নিজস্ব আবর্জনা তাদের সঙ্গে বহন করে নিয়ে যায়।

জাপানিরা পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে এতটাই সচেতন যে, যতক্ষণ না সঠিকভাবে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা সম্ভব, ততক্ষণ তারা সেই আবর্জনা নিয়ে রাস্তায় বের হোন না।
এই সাংস্কৃতিক রীতিটি জাপানি সমাজে গভীরভাবে গেঁথে আছে। যার ফলে যত্রতত্র ডাস্টবিন দেখা যায় না।

নিরাপত্তা উদ্বেগ

জাপানে আবর্জনার পাত্র কম থাকার আরেকটি কারণ হচ্ছে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ। অতীতে, তা কখনো কখনো বিস্ফোরক বা বিপদজনক উপাদান রাখার জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হত।

দু’দশক আগে ১৯৯৬ সালে টোকিওর পাতাল রেলে সারিন গ্যাস হামলার পর বেশিরভাগ ডাস্টবিন সরিয়ে নেয় দেশটির প্রশাসন। জানা যায়, ওম শিনরিকিও নামে গুপ্ত সংগঠনের সদস্যরা পাতাল ট্রেনের ডাস্টবিনে সারিন নামে মারাত্মক গ্যাস রেখেছিল।

এতে ১৩ জন যাত্রীর মৃত্যু ও ৫৪ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে আরও ৯৮০ জন এই গ্যাসের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব

ব্যক্তি ও সামাজিক পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও জাপানিদের দায়িত্ববোধ প্রবল। এর মানে হল যে জাপানিরা নিজেরাই আবর্জনা বাছাই করে, যতটা সম্ভব পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বিপজ্জনক উপকরণগুলি সঠিক জায়গায় ফেরত পাঠান।

অনেক ক্ষেত্রে, বর্জ্য সংগ্রহকে সরকারি দায়িত্ব বলে এড়িয়ে না গিয়ে ব্যক্তি বা সামাজিক গোষ্ঠী নিজেরাই ব্যবস্থা করেন। জাপানের বর্জ্য হ্রাস এবং ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের চাবিকাঠি এটাই।

কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা

জাপানিরা যেকোনো পুরনো জিনিসকেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করায় বিশ্বাসী। প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সংস্থা তথ্য অনুসারে, জাপানে ৭৭ শতাংশ প্লাস্টিকপুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়।

বর্জ্য নিষ্কাশনে কঠোর নিয়মকানুন রয়েছে এবং অনেকটা সাবধানে বাছাই এবং নির্ধারিত স্থানে সংগ্রহ করা হয়। এতে জনসমক্ষে ডাস্টবিনের প্রয়োজনীয়তা অনেকটা কমে গেছে। কারণ, জাপানিরা জানে তাদের বর্জ্য কোথায় ফেলতে হবে।

সামগ্রিকভাবে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জাপানের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। তবে দেশকে পরিষ্কার রাখতে এবং আবর্জনা কমাতে তাদের এমন উদ্যোগ অত্যন্ত কার্যকর।

তবে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনায় রাস্তাঘাট আবর্জনায় ভরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখে ডাস্টবিন পুনরায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে জাপানে।

সূত্র:দেশ রূপান্তর নিউজ



« (পূর্ববর্তী সংবাদ)



সম্পর্কিত সংবাদ

  • শরীরে র‍্যাশ বা দানা দেখা গেলে যা করবেন
  • ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৮১
  • আজকের দিনটি কেমন যাবে আপনার?
  • স্যার বলতেন, ‘সৎ থাকলেই হবে, আর কিছুর প্রয়োজন নেই’
  • যে আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী
  • সন্তানের সঙ্গে দূরত্ব কমাবে এই ৫ কৌশল
  • রাশিফলে জেনে নিন, কেমন যাবে আজকের দিন
  • প্রেমিকা মিথ্যা কথা বললে বুঝবেন কীভাবে?