উত্থান-পতনেও আমাদের সম্পর্ক টিকে আছে : ভারতের হাইকমিশনার

নিউজ ডেস্ক :: পারস্পরিক নির্ভরতার বাস্তবতা এবং পারস্পরিক সুবিধা ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন পরিবর্তন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ এবং উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক টিকে আছে।

ঐতিহাসিক ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ।

৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে প্রণয় ভার্মা বলেন, ইতিহাসগতভাবেই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক স্মরণীয়। কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১০ দিন আগেই ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি একটি মাইলফলক, যা কখনো মোছা যায় না।

তিনি বলেন, ওই তারিখটি দুই দেশের অংশীদারত্বের একটি বড় চিহ্ন, যা বিভিন্ন পরিবর্তন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ এবং বিভিন্ন উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক টিকে আছে। আমাদের এই সম্পর্ক টিকে আছে দুই দেশের সংবেদনশীলতা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধায়।

গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে মন্তব্য করে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, এটা সম্ভব হয়েছে ৫৩ বছর আগে করা আমাদের ত্যাগের কারণে। ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ এবং ভারত অনেক দূর এগিয়েছে, উন্নতি করেছে দ্রুতগতির সাথে।

তিনি বলেন, দ্রুতগতির অর্থনীতি, ধারাবাহিক উন্নতি, মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের আকাক্সক্ষার উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যে নতুন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা আজ আমাদের বহুমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একে-অপরের উন্নয়নের পরিপূরক।

প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত সবসময় বাংলাদেশের সাথে শান্তিপূর্ণ, গঠনমূলক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে জানিয়ে প্রণয় ভার্মা বলেন, এর ভিত্তি ছিল সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক বোঝাপড়া।
তিনি বলেন, আমাদের সুসম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। যেখানে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সাথে জড়িত। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের দুই দেশের জনগণ প্রধান অংশীদার এবং যে সম্পর্ক আমরা তৈরি করেছি, তার প্রধান উদ্দেশ্য দুই দেশের জনগণের উন্নয়ন। এতে দুই দেশের জনগণই উপকৃত। দুই দেশের বর্ডার ট্রান্সপোর্ট, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঞ্চালন, আমাদের অর্থনৈতিক সংযোগ, এগুলো সবই মূলত আমাদের জনগণের সমৃদ্ধি তৈরি করে এবং তাদের কল্যাণে অবদান রাখে।
পৃথিবীর কোনো দেশ, বিশেষ করে আঞ্চলিক ও প্রতিবেশী দেশগুলো একে-অপরকে ছাড়া এককভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না বলে মনে করেন ভারতের হাইকমিশনার। বলেন, আমরা কেউ এককভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারব না। আমরা আমাদের ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতাকে আমাদের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা এবং নতুন উচ্চাকাক্সক্ষা দ্বারা চালিত নতুন সুযোগে রূপান্তর করতে চাই।

তিনি বলেন, এটা সত্য যে, বাংলাদেশে অশান্ত পরিবর্তন সত্ত্বেও, আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, আমাদের পরিবহন ও জ্বালানি সহযোগিতা, আমাদের জনগণের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা ইতিবাচক গতি বজায় রেখেছে, যা প্রমাণ করে আমাদের সম্পর্ক সত্যিই স্থিতিশীল। এটি আরো দেখায় যে, নির্বিশেষে আমাদের চার পাশে যা পরিবর্তন হচ্ছে তা আমাদের পারস্পরিক নির্ভরতার বাস্তবতা এবং পারস্পরিক সুবিধা আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী (বীর প্রতীক)। সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল ইসলাম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- শিল্পকলা একাডেমির সাবেক পরিচালক মনিরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির আহমেদ চৌধুরী, বাচিকশিল্পী টিটু মুনশী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারতের জাতীয় সঙ্গীতসহ বিভিন্ন রণসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।






সম্পর্কিত সংবাদ

  • সীমান্তে উত্তেজনা : নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে পাল্টা তলব
  • প্রবাসীদের সুখবর দিল সৌদি আরব
  • টিউলিপকে বহিষ্কার করছে ব্রিটিশ সরকার!
  • ২০ জানুয়ারির আগেই যুদ্ধ সমাপ্তির আশা হামাসের
  • দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তীর্ণ এলাকা
  • ওয়াশিংটন ডিসির ডুয়াফি’র সভাপতি ইসরাত সম্পাদক ডরথী
  • বিএসএফ’র হাতে আটক ১৪ বাংলাদেশী ভারতের কারাগারে
  • নিউ ইয়র্কে পাতাল ট্রেনে ঘুমন্ত নারীযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা