যারা এখন লুটপাট-জুলুম-অত্যাচার করছেন, তাদের হাতেও দেশ নিরাপদ নয়’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ৫ আগস্টের পর যারা দেশে মিথ্যা মামলা, লুটপাট, জুলুম, অত্যাচার করছেন, তাদের হাতেও দেশ নিরাপদ নয়। তাদের আর আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা ডাকাত না, জালেম না, অত্যাচারী না, তাদেরকে অত্যাচার করা যাবে না। আমি ওইসব ভাইদের বলব, যারা আওয়ামী লীগ করেছিলেন, যারা আদর্শবান, মনে রাখবেন, আদর্শবান ব্যক্তির দল কখনো আওয়ামী লীগ হতে পারে না। সময় আছে তওবা করুন। আগের দেশ আর আমরা চাই না।

সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সোনারগাঁ শাখার আয়োজনে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি দূর করতে না পারলে এ দেশের পরিবর্তন হবে না। এ দেশে ওসি পরিবর্তন হয়, এসপি পরিবর্তন হয়, কিন্তু ঘুষ ঠিকই থাকে। আমরা ঘুষ ও চোর মুক্ত বাংলাদেশ চাই।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বারের বেশি যাতে না হয় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। কিন্তু আমি মনে করি, শুধু ব্যক্তি পরির্বতন নয়, সুন্দর দেশ গড়তে নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। যেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই সমান অধিকার ভোগ করতে পারি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূচনা প্রসঙ্গে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু এ আন্দোলনের সূচনা কিভাবে হয়েছিল? আমি গত বছর মেয়র ইলেকশন করেছিলাম। ওই সময় আমার ওপর হামলা হয়েছিল। তখন আমি রাস্তায় বসে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, শেখ হাসিনার পতন না করা পর্যন্ত রাস্তা থেকে সরব না। আমি বলেছিলাম, আল্লাহ যেন আওয়ামী লীগের পতন আমার নিজের চোখে দেখিয়ে দেন। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আমাদের সে আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রতিফল হয়েছে। আমরা সার্থক হয়েছি।

তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলন তো শেখ হাসিনাকে পতনের জন্য ছিল না। তাদের আন্দোলন ছিল কোটার জন্য। পরে গড়াতে গড়াতে এটি সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল।

এ সময় সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি প্রসঙ্গে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বর্তমানে সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্রবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলনীতি হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনায় ও ঘোষণায় এ চার মূলনীতি ছিল না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার।

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন ধ্বংসের পথে। অটো পাশের মাধ্যমে মেধা নষ্ট করা হয়েছে।

এ সময় গণসমাবেশে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং গত ১৬ বছরে সংঘটিত রাজনৈতিক, প্রশাসনিক হত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার, দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সভাপতি হাজী নূরুল আমিন খাঁনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী ইমদাদুল হাসেমী, জেলার ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ যুবায়ের হোসাইন, জেলার ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ ওমর ফারুক, জেলার ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ আলী এবং সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
সূত্র :যুগান্তর।






সম্পর্কিত সংবাদ

  • বাড়িতেই বস্তায় বস্তায় টাকা রাখতেন আমু
  • পার্শ্ববর্তীদেশগুলোর সঙ্গে ‘প্রভুত্ব রাজনীতি’ করছে ভারত : ফখরুল
  • আইআরআই-এর প্রতিনিধি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  • ব্যারিস্টার রাজ্জাক এবি পার্টি ছাড়লেন
  • অভিযোগ প্রমাণ হলেই মামলা : জিরো টলারেন্সে বিএনপি’র হাইকমান্ড
  • ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুরভিসন্ধিমূলক
  • যে কোনো মূল্যে দেশ স্থিতিশীল রাখতে হবে
  • এখনই আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ নেই : মিয়া গোলাম পরওয়ার