‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের ক্ষয় হচ্ছে না, আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে’

নিউজ  ডেস্ক  ::  সেন্টমার্টিনে প্রাণচাঞ্চল্য কমে গেলে দ্বীপটাই হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’। সংগঠনটি বলছে, দ্বীপের ক্ষয় হচ্ছে না; বরং আয়তন দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দ্বীপে যাতায়াত ও অবস্থানে সরকারি বাধা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সদস্যরা এমন মন্তব্য করেন। স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির আহ্বায়ক জিয়াউল হক বলেন, দ্বীপ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে এ রকম কিছুই হচ্ছে না, বরং দিন দিন দ্বীপের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগরের ঢেউয়ে কিংবা প্রাকৃতিক কারণে দ্বীপের এক অংশ ভাঙলে দ্বীপের আরেক অংশে চর জেগে ওঠে। দশকের পর দশক এভাবেই আমরা দেখছি এবং এটাই হচ্ছে দ্বীপের বাস্তবতা।

অথচ এই বাস্তবতাকে বাদ দিয়ে দু’একটি বিদেশি জার্নালের কল্পনাপ্রসূত ও কন্সপিরেসি থিউরিমূলক গবেষণার রেফারেন্সে সরকারিভাবে দেশীয় শিল্প ও দেশের জনগণের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে দিয়ে দ্বীপবাসীর মৌলিক ও মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। পরিবেশ উপদেষ্টা দেশের মানুষের পরামর্শ ও দাবি-দাওয়াকে পাত্তা না দিয়ে বিদেশি জার্নালের পরামর্শে তিনি নিজ দেশের পর্যটন শিল্প ও দ্বীপবাসীকে একটা মারাত্মক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

যেটা কোনো দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিকের কাজ হতে পারে না। তিনি বলেন, বিদেশি জার্নালের রেফারেন্স টেনে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেছেন, পর্যটকরা কোরাল তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তাই ২০৪৫ সালের মধ্যে নাকি সব কোরাল ক্ষয় হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ (নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ) ডুবে যাবে! পরিবেশ উপদেষ্টার রেফারকৃত এই কথা সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অবৈজ্ঞানিক।

উপদেষ্টা কখনও দ্বীপে গিয়েছেন কি না, অথবা গিয়ে কখনও কথিত জার্নালের দেওয়া তথ্যসমূহের সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করেছেন কি না- আমরা তা জানি না। তবে গিয়ে থাকলে এমন অবাস্তব কথা তিনি বলতে পারতেন না। কারণ বিজ্ঞান ও বাস্তবতা হচ্ছে, কোরাল ক্ষয় হয় না, বরং প্রতি বছর গড়ে প্রায় ০ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৮ সেমি হারে বৃদ্ধি পায়।

দ্বীপে সরেজমিনে দেখা যায়, মৃত কোরাল জমে দ্বীপের আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ উপদেষ্টা বলছেন, কোরাল ক্ষয়ে নাকি দ্বীপ হারিয়ে যাচ্ছে! পরিবেশ উপদেষ্টার বক্তব্যের সাথে বিজ্ঞান ও বাস্তবতার মিল পাওয়া যায় না। জিয়াউল বলেন, দ্বীপের কোরালগুলো অনেক বড়, অনেক ওজন, অনেক ধারালো এবং পানির অনেক নিচে থাকে যেগুলো পর্যটকদের পক্ষে তুলে আনা সম্ভব নয়। কোরাল নিয়ে আসা দূরের কথা, জীবন্ত কোরালে হাত দিলেই হাত কেটে যায়।

তাই কথিত বিদেশি জার্নাল কিংবা কোরাল নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে যে প্রচারণা সেটি অসত্য। মূলত প্রাকৃতিক কারণেই কিছু কোরাল মারা যায়। আবার নতুন কোরাল জন্মায়। পর্যটকদের কেউ কেউ সাগরে ভেসে ওঠা সেই মৃত কোরাল অনেক সময় নিয়ে আসেন যেটাতে দ্বীপ কিংবা পরিবেশের ক্ষতি নয় বরং উপকার হয়, সাগর পরিচ্ছন্ন থাকে। তারপরেও সেসব মৃত কোরাল আনার ব্যাপারে যদি নিষেধাজ্ঞা থাকে সেটা সরকারিভাবে বাস্তবায়ন করলেই সমাধান হয়ে যায়।

কিন্তু মিথ্যা অজুহাতে দ্বীপে যাওয়া ও অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার রহস্য জনগণ জানতে চায়। সংগঠনটির মুখ্য সংগঠক শাকিল মিয়া বলেন, আমাদের দ্বীপটি ভৌগোলিক অবস্থানগতভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি অবস্থানে রয়েছে। দ্বীপে ভ্রমণ বন্ধ রাখলে একসময় দ্বীপ জনশূন্য হয়ে যাবে। পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের মগ, আরাকানী ও ভারতের জেলেরা একসময় দ্বীপটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে।

ইতোমধ্যেই মিয়ানমার ও আরাকান আর্মি দ্বীপটিকে একাধিকবার তাদের বলে দাবিও করেছে। অর্থাৎ দেশের অখণ্ডতা রক্ষার তাগিদেই নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপকে সবসময় জনবান্ধব ও জনগণের আসা যাওয়াকে উৎসাহিত করতে হবে। পরিবেশবাদসহ কোনো কিছু্র অজুহাতেই দ্বীপ ভ্রমণে বাধা দিলে দ্বীপটি আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাই নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ ভ্রমণে সব ধরনের সরকারি বাধা তুলে নিতে হবে।

সূত্র : কালবেলা





সম্পর্কিত সংবাদ

  • বুধহাটা ক্লাস্টারের দুরাবস্থাগ্রস্থ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণের ঝুঁকির মধ্যে ক্লাশ চলছে
  • শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সকল ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছে নবজীবন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
  • অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রমে প্রবেশ করল চবি
  • নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় আন্ত: স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আবারও চ্যাম্পিয়ন
  • রেসিডেনসিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • চাকরি হারালেন বেরোবি শিক্ষক ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল
  • যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ঢাবির ছয় প্রবেশমুখে ব্যারিয়ার নির্মাণ শুরু