সমাজে জঞ্জাল রয়ে গেছে, সব পরিচ্ছন্ন করতে হবে : জামায়াত আমির
নিউজ ডেস্ক :: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের দেশ এখনো পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে এবং যুবসমাজকে বুকে ধারণ করে মিলেমিশে লড়াই করে দেশকে মুক্ত করব, ইনশাআল্লাহ।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের দেশ এখনো পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে এবং যুবসমাজকে বুকে ধারণ করে মিলেমিশে লড়াই করে দেশকে মুক্ত করব, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেছেন, ‘সমাজে হাজারো জঞ্জাল রয়ে গেছে। এসব জঞ্জাল পরিচ্ছন্ন করে ফেলতে হবে।’
রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে খুলনার ইস্টার্ন জুটমিল ময়দানে জামায়াতের খানজাহান আলী থানা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যে লগি-বৈঠার আন্দোলনে খুনের রাজনীতি শুরু হওয়া এবং ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করেন ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘পিলখানা খুনের সাথে আওয়ামী লীগের নেতারাই জড়িত ছিলেন। এরপরে তারা স্বাধীনতার আরেক অতন্দ্র প্রহরী জামায়াতের নির্দোষ নেতাদের সাজানো-পাতানো বিচার দিয়ে জুডিশিয়াল কিলিং করে। জামায়াতের অসংখ্য নেতা ও কর্মী গুম, হত্যার শিকার হয়, অনেককে পঙ্গু করা হয়।’
জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেসব সন্তান ‘বুকের ভেতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ বলে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে সন্ত্রাসী-ফ্যাসিস্টদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘আগামীতে মুক্তিপাগল জনগণ যে দেশ দেখতে চায়, আমরা সেই দেশের দায়িত্ব আমাদের সন্তানদের ও যুবসমাজের হাতে তুলে দিতে চাই।’
দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দেশপ্রেমের নমুনা ফুটিয়ে তুলতে হবে। আমাদের প্রত্যেকটি কাজ হবে জনবান্ধব, জনকল্যাণমূলক। আমরা মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতের মুক্তির জন্য ডাকব। দুনিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে আরো অনেক ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা সুশৃঙ্খল শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশ কামনা করলেও কেউ কেউ আছে আমাদেরকে একটা দিনও শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না, আমাদের শান্তি কেড়ে নিতে চায়। তাই আমাদের আকাশে মাঝে মাঝে কালো মেঘ, আবার কখনো কালো শকুনের ছায়া দেখা যায়। দোয়া করি, আল্লাহ কালো মেঘ ও শকুনকে বাংলার আকাশ থেকে সরিয়ে দেন।’
তিনি সকলকে জ্ঞানের আলোয় সমৃদ্ধ করে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘কল্যাণের দাওয়াত প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। বন্ধু হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের মধ্যে আশা জাগাতে হবে যে এ সমাজের উত্থান সম্ভব। এটাকে শ্রেষ্ঠ জাতি এবং দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।’
তিনি পরনির্ভরশীলতা ত্যাগ করে কৃষি ও শিল্প নির্ভর দেশ গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘হুবহু আমাদের বক্তব্যটা দেবেন। আমাদের বক্তব্যের নামে আপনাদের কোনো বক্তব্যকে আমাদের ওপর চাপাবেন না। গতকাল সাতক্ষীরায় আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে। আমি ঢাকায় গিয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সাথে বসব। আমরা আপনাদের কী ক্ষতি করেছিলাম? আমাদের নামে তারা কেন এ অপবাদ দিলেন? মিডিয়াকে আমি স্যালুট জানাই। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলা। আমার মধ্যে কোন কালো থাকলে আমাকে ছাড় দেবেন না। কিন্তু আমার সাদা পোশাককে কেউ কালো করবেন না। আপনারা এক সময় চাপ, সংকোচ ও ভয়ে বিধ্বস্ত ছিলেন। আপনারা সত্য কথাটাকে সত্য হিসেবে লিখতে পারেননি। অশুভ শক্তির চাপে সত্য গোপন করতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা এটার কিন্তু এখন তো আপনারা মুক্ত। এখন কেন আপনারা নিজের চিন্তা যুক্ত করবেন। আপনার চিন্তা আপনি বলুন। আমার মুখ দিয়ে কেন বলবেন? কোনো মানুষের কথাই বিকৃত, ম্যালাফাই বা টুইস্ট করা উচিত নয়। সাংবাদিকদের পাশে আমরা আছি। আমার বিপক্ষে গেলেও থাকব, যদি জিনিষটা ন্যায়সংগত ও সত্য হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সমালোচনাকে ভয় পাই না। বরং অভিনন্দন জানাই সেসব সমালোচনা, যা জাতির জন্য উপকারী। আমরা দেশপ্রেম, ন্যায্য ও দেশগঠনের কাজে সাংবাদিকসহ সকলকে পাশে চাই।’
থানা সভাপতি ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা-৫ আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য যশোর-কষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন, খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেক ও সহকারি পরিচালক মাওলান আবুল কালাম আজাদ, খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, নড়াইল আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, খুলনা জেলার নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সরওয়ার, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, মাওলানা গোলাম, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, অধ্যক্ষ গাউসুল আযম হাদী, গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, হাফেজ আলিমুল ইসলাম, মাস্টার সিরাজুল ইসলাম, হাফেজ বেলাল হোসাইন,আবদুল হালিম মোল্লা প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তার বক্তৃতায় বলেন, ‘স্বৈরাচারি শাসনযন্ত্রের সৃষ্ট বিশাল সমস্যার সহজে সমাধান করা যাবে না। তাই আপনারা একটু ধৈর্য ধরবেন। অন্তর্বতী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করব। আমাদের আরেকটি সমস্যা হলো বিগত আওয়ামী সরকারের বন্ধ করে দেয়া ২৬টি সরকারি জুটমিল। এখন বিজেএমসির কর্মকর্তারা ঠিকমতো বেতন পেলেও শ্রমিকরা তাদের মজুরি, পিএফ, গ্রাচুইটির টাকা দেয়া হয় না।’
সরকারের কাছে তিনি মিলগুলো পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান।p
সম্পর্কিত সংবাদ
গর্ভবতী-সন্তানসহ নারীরাও গুমের শিকার হয়েছিলেন : গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন
নিউজ ডেস্ক :: তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে ভয়ংকর সব তথ্য পেয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্তবিস্তারিত…
ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা
নিউজ ডেস্ক :: ৩৩ বছরের পুরনো সংবাদ মাধ্যম দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধের ঘোষণাবিস্তারিত…