যশোর প্রতিনিধি :: বন্যার্তদের জন্য সংগৃহীত টাকার দুই-তৃতীয়াংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে।
সংগঠনের সাবেক ১৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র গত ১ সেপ্টেম্বর জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠিয়েছেন।
অবশ্য অভিযুক্ত দুই নেতা তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, ‘উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব যথাক্রমে একলাছ হোসেন ও বিপ্লব বিশ্বাস দুজনকেই চিনি। তারা পরীক্ষিত। সংগঠনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র বিনা কারণে তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সেলিম রেজা, উপজেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি শাহিনুর রহমান, মাহবুবুর রহমানসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সাবেক ১৮ নেতা স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদল এবং উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণদের নিয়ে সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় প্রতিটি ইউনিয়ন ১০ হাজার টাকা করে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক একলাছ হোসেন এবং সদস্যসচিব বিল্লাল বিশ্বাসের কাছে জমা দেবে। সে অনুযায়ী জহুরপুর ইউনিয়ন সাড়ে তিন হাজার, বন্দবিলা ইউনিয়ন ১০ হাজার, রায়পুর ইউনিয়ন সাড়ে সাত হাজার, নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়ন সাত হাজার, ধলগ্রাম ইউনিয়ন ১০ হাজার, দোহাকুলা ইউনিয়ন ছয় হাজার, দরাজহাট ইউনিয়ন ১০ হাজার, বাসুয়াড়ী ইউনিয়ন ১০ হাজার, জামদিয়া ইউনিয়ন ছয় হাজার ৪০০ টাকা দেয়। ফলে মোট ৭০ হাজার ৪০০ টাকা সংগ্রহ হয়।
তাদের দাবি, ওই টাকা থেকে যশোর জেলা যুবদল ফান্ডে মাত্র ১০ হাজার টাকা এবং বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির ফান্ডে ১৫ হাজার টাকা, সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা প্রদান করেছেন যুবদলের দুই নেতা। অবশিষ্ট ৪৫ হাজার ৪০০ টাকার কোনও হদিস নেই।
এসব বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব বিল্লাল বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক ওই নেতারা ভুল তথ্য সরবরাহ করেছেন। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, জেলা যুবদল নেতৃবৃন্দ আমাদের তাগাদা দেন দ্রুত অর্থ ফান্ডে জমা দিতে। আমরা তাৎক্ষণিক সরবরাহ ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার জেলা যুবদল এবং ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় উপজেলা বিএনপিকে।
এরপর টাকা আস্তে আস্তে ওঠে এবং সব মিলিয়ে তা ৬০ হাজারের বেশি না। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপিকে ফের ১৫ হাজার টাকা এবং ৭ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূবকে বিশাল সংবর্ধনায় কিছু খরচ হয়েছে। এসব বিষয়ে দলের নেতা এবং জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করা হয়।’
জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। বিষয়টি আমরা জানি। বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবকে আমরা বহু আগের থেকে চিনি ও জানি। অভিযোগকারীদের তথ্য সঠিক নয়। সংগৃহীত টাকার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। তারা নেতৃবৃন্দকে হেয় করার মানসে এইসব কাজ করেছেন।’