স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পদত্যাগ

নিউজ ডেস্ক :: ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে সরকার পতনের ২৭ দিনের মাথায় পদত্যাগ করলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। গতকাল তিনি প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তার পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট গ্রহণের পর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণ জারি করে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়। স্পিকারের পদ শূন্য হওয়ায় পরবর্তী সংসদের এমপিদের শপথ পড়ানোর বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নতুন এমপিদের কে শপথ পড়াবেন এ প্রশ্নে একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ মানবজমিনকে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই সবমিলিয়ে কী হচ্ছে বা হবে তা বলা মুশকিল।
কারণ আমাদের সামনে এ পরিস্থিতির কোনো উদাহরণ নেই। বাংলাদেশের সংবিধান বলছে, পদত্যাগ করলেও নতুন স্পিকার দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত শিরীন শারমিন চৌধুরীই পদে থাকছেন বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ ত্রয়োদশ সংসদের নির্বাচিত স্পিকার দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত শিরীন শারমিনই স্পিকার হিসেবে গণ্য হবেন। তিনিই নতুন সংসদের সদস্যদের শপথ পড়াবেন।
সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের পদ কীভাবে শূন্য হবে, সে বিধান বলা আছে। সেখানে সংসদ সদস্য পদ না থাকা, পদত্যাগ করাসহ ৫টি কারণে স্পিকারের পদ শূন্য হবে বলে বলা আছে। তবে একই অনুচ্ছেদে বলা আছে, এসব বিধান সত্ত্বেও ক্ষেত্রমতে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার তার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল রয়েছেন বলে গণ্য হবে। বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদ জাতীয় সংসদের স্পিকার। সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ক্ষেত্রমতো রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কিংবা রাষ্ট্রপতি পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্পিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যদিকে সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘স্পিকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।’ সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদে সংসদে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের বিষয়ে বলা আছে। সংবিধান বলছে, কোনো সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সংসদ একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করবে। স্পিকারের পদ শূন্য হবে, যদি তিনি সংসদ সদস্য পদে না থাকেন, মন্ত্রী হন, অপসারণের প্রস্তাব সংসদে গৃহীত হয়, পদত্যাগ করেন অথবা কোনো সাধারণ নির্বাচনের পর অন্য কোনো সদস্য তার কার্যভার গ্রহণ করেন।
বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ই আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। পরদিন সংসদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেয়া হলেও স্পিকারের পদ তাৎক্ষণিভাবে শূন্য হয় না।
পরবর্তী স্পিকারের শপথ পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে থেকে যান। তবে সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে পদত্যাগ করছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে চলে যান। সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের কেউ কেউ গ্রেপ্তার হন। তবে শিরীন শারমিন চৌধুরী আর প্রকাশ্যে আসেননি।
৮ই আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠানেও তিনি যাননি। তিনি কোথায় আছেন তাও স্পষ্ট নয়।
সম্পর্কিত সংবাদ

দুর্নীতির খবর যেন ধামাচাপা দেয়া না হয় : দুদক চেয়ারম্যান
নিউজ ডেস্ক :: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেছেন, সমঝোতার মাধ্যমে ঘটেবিস্তারিত…

হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর পক্ষে উত্তরপূর্ব ভারতের ৫৫ শতাংশ মানুষ
নিউজ ডেস্ক :: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিবিস্তারিত…