নিউজ ডেস্ক :: সদ্য ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ২৪২ সদস্যের এ কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপকারী এক নারী শিক্ষার্থী। বিএনপির এই অঙ্গ সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ত্যাগী কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। নতুনদের নিয়ে পকেট কমিটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্রুপ করার অভিযোগ থাকা সৈয়দা সুকাইনা নাফিসা তরঙ্গ পেয়েছেন জেন্ডার ন্যায্যতা ও সমতাবিষয়ক সম্পাদকের পদ।
৫ আগস্টের পর খালেদা জিয়ার একটা ভিডিও বার্তা নিজ টাইমলাইনে শেয়ার দিয়ে তিনি ব্যঙ্গাত্মকভাবে লেখেন, ‘ওমা একি জাইগা উঠছে দেখি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন ‘মাদার্স অব বার্বি গার্লস’। এটিকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি হিসেবে দেখছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নাফিসা ফেসবুকে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পাওয়ার পরই আমার কিছু ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট নিয়ে অনেকে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আমার স্ট্যাটাসের ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হচ্ছে। আমাদের প্রজন্ম যেভাবে বেড়ে উঠেছি তাতে আমাদের রাজনৈতিক ভাষা প্রয়োগের দূর্বলতা থাকতে পারে কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা বা লেখার মতো শিক্ষা পারিবারিকভাবেই পাইনি এবং ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা ব্যতীত অন্য কিছু কখনও চিন্তাতেও আসেনি।
৭ আগস্ট দীর্ঘ অসুস্থতা সত্ত্বেও জনগণের উদ্দেশ্যে উনার ভাষণকে আমি ইতিবাচক হিসেবে দেখে আমাদের প্রজন্মের ভাষা দিয়েই আমি প্রকাশ করতে চেয়েছি কিন্তু অনেকে নিজেদের মতো ব্যাখ্যা দাঁড় করানোয় হয়তো আমার স্ট্যাটাসটি ভুলভাবে সকলের কাছে যাচ্ছে। তারপরেও যদি কারো মনে আমার স্ট্যাটাস নিয়ে কোনও কষ্ট থেকে থাকে তাহলে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পাওয়া আরেক নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এই কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে বিতর্কিত করেছে। ছাত্রলীগের তেলবাজ, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপকারীসহ যাদের সঙ্গে ছাত্রদলের ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই, এমন লোকজনও কমিটিতে জায়গা পেয়েছে। এই কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি।
যারা বিগত ফ্যাসিবাদের আমলে জীবনবাজি রেখে ছাত্রদলের সব কর্মসূচি পালন করেছে, তাদের চেয়ে নতুনদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিতে। এটা ঢাবি ছাত্রদলকে পঙ্গু করে একটা সিন্ডিকেটের আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র।’ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ সম্পর্কে আমরা অবগত এবং ইতিমধ্যে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’