রাঙ্গামাটিতে সন্ত্রাসীদের চাঁদা দাবি, কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলেনি অধিকাংশ জেলে
নিউজ ডেস্ক ::রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবিতে কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলেনি অধিকাংশ জেলে। দেশের এক দশমাংশ এলাকা জুড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন উপজাতীয় চাঁদাবাজদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় উপজাতীয় আঞ্চলিক দলগুলোর চার গ্রুপের দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ না করায় মৌসুমের শুরুর দিন রোববার মৎস্য আহরণ উৎসবে কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলতে পারেনি ৬০ শতাংশ জেলে।
এতে রাঙ্গামাটির স্থানীয় বাজারগুলোতে কাপ্তাই হ্রদের মাছের উপস্থিতি অন্যান্য বছরের মতো লক্ষ্য করা যায়নি।স্থানীয় একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১২৭ দিন সরকারি সিদ্ধান্তে বন্ধ থাকার পর শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন পাহাড়ি ঘোনায় জাল ফেলতে যায় কয়েক হাজার জেলে। কিন্তু পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনের চারটি গ্রুপ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে জেলেদের জাল ফেলতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এ সময় ভারী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়াও দিয়েছে বলে জানান কয়েকজন জেলে। তারা জানান, আমরা প্রাণভয়ে জাল না ফেলে শহরের নিকটবর্তী বাঙালি জনবহুল এলাকায় চলে এসেছি।ব্যবসায়ীদের কয়েকজন এই প্রতিবেদককে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমরা যথারীতি আঞ্চলিক দলগুলোর কাছ থেকে টোকেন কেটেছি। কিন্তু মাছ ধরার দিন তারা আমাদের কাছে চারটি গ্রুপের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা চাঁদা চেয়ে খবর পাঠায়। দীর্ঘদিন মাছের ব্যবসা বন্ধ থাকার সময়ে জেলেদের প্রয়োজনীয় খরচ চালাতে হয়েছে।
কিন্তু ব্যবসার শুরুর দিনটাতে নতুন করে চাঁদা দাবি করায় আমরা পথে বসার উপক্রম হয়েছি।এদিকে, নিরাপত্তাবাহিনীর দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র চাঁদা দাবির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এই বিষয়ে ব্যবসায়ীরা-ই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন।রোববার সকালে কাপ্তাই মৎস্যজীবী সমিতির কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেএসএস (সন্তু) সমর্থিত কিছু সদস্য কাপ্তাই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নিকট হতে অতিরিক্ত বাৎসরিক চাঁদা দাবি করে।
যা অন্যান্য বছরে তুলনায় অনেক বেশি। তাদের কথামতো চাঁদা না দেয়ায় জেলেদের মাছ ধরতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। এরফলে জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত রয়েছে। কাপ্তাই মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের উপকেন্দ্র প্রধান জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে স্থানীয় সাংবাদিককে বলেন, রোববার সকাল পর্যন্ত কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে জেলেরা কোনো মাছ নিয়ে আসেনি। কী কারণে মাছ ধরা হতে বিরত আছে তা জানি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহালছড়ির একজন, রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের দুইজন ও কাপ্তাইয়ের দুইজন মিলে সর্বমোট ৫ জন কালেক্টরের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সকল তথ্য সংগ্রহ করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। শনিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে রাঙ্গামাটি শহর সংলগ্ন কাপ্তাই হ্রদের ওপারে বালুখালীর নিচ এলাকা, নানিয়ারচর রুট, কাপ্তাই লাইন এলাকা, কাইন্দা, চেমী লাইন এলাকায় কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলতে দেয়নি উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।
রাতের বেলায় উক্ত এলাকাগুলোতে অস্ত্র নিয়ে টহল দিয়েছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।বিষয়টি নিয়ে জানতে রাঙ্গামাটিতে নৌ-পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। কেউ আমাদেরকে এসব বিষয়ে জানায়নি।
সম্পর্কিত সংবাদ
সিপিবি খুলনা মহানগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড অ্যাড. বাবুল হাওলাদারের শ্বশুরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন
খুলনা প্রতিনিধি :: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) খুলনা মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর কমিটিরবিস্তারিত…
পাইকগাছায় বেগম রোকেয়া দিবসে ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতাকে সম্মাননা প্রদান
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ, বেগম রোকেয়া দিবস ও শ্রেষ্ঠবিস্তারিত…