সৈয়দপুরে বদ্ধভূমির শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের মূল্যবান গেট চুরি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি :: নীলফামারীর সৈয়দপুরে এবার শহরের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের প্রায় ৪ মণ ওজনের দুটি গেট চুরির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতের কোন এক সময় শহরের গোলাহাট রেললাইনের পাশে গণহত্যার স্মৃতি বিজরিত বধ্যভূমির ওই স্মৃতিস্তম্ভের মূল গেটটি কেটে নিয়ে যায় চোরেরা।
স্থানীয়দের ধারণা লোহাচোর সিন্ডিকেট অথবা মাদকাসক্তরা এ চুরির ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। তারা অবিলম্বে চুরির সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দা আজহারুল, মোজাহিদসহ অনেকে জানান, কয়েকদিন আগে ওই স্মৃতিস্তম্ভের ফটকের এক সাইডের গেট চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। তখনই আশঙ্কা করা হয়েছিল ফটকের অপর গেটটিও চুরি হতে পারে। আর সেই আশঙ্কাই সত্য হলো। ১৩ জানুয়ারি সকালে দেখা যায় ফটকের অপর সাইডের গেটও চুরি হয়ে গেছে। তাদের ধারণা রাতে ওই এলাকা দিয়ে মানুষজনের চলাচল না থাকার সুযোগে গেটটি নিয়ে গেছে চোরেরা।
এলাকার একাধিক সুত্র জানায়, বদ্ধভূমির ওই স্মৃতিস্তম্ভের পাশে মাদক বেচাকেনার আড্ডা থাকে সবসময়। রাতে বদ্ধভূমির স্মৃতিস্তম্ভের অভ্যন্তরে প্রকাশ্যে বসে নেশার আড্ডা। হয়তো লোহাচোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের ইন্ধনে মাদকাসক্তরাই এ চুরির ঘটনা ঘটাতে পারে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সরেজমিনে ওই এলাকায়  গিয়ে দেখা যায়, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের মূল ফটকের উভয় পাশে ৪/৫ যায়গায় হেস্কো ব্লেড দিয়ে কাটা। আশেপাশে মাদকসেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে। অনেকের মতে ওই মাদকাসক্তরাই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। বর্তমানে বদ্ধভূমির স্মৃতিস্তম্ভটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে।
এ বিষয়ে গোলাহাট বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও শহীদ
পরিবারের সদস্য নিজু কুমার আগরওয়ালা জানান, এটা খুবই দুঃখজনক যে স্মৃতিস্তম্ভটি এখন
নিরাপদ নয়। বদ্ধভূমির স্মৃতিস্তম্ভের গেট চুরি করা ওই চোরদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের মূল ফটক চুরির ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। এটা দুঃখজনক ব্যাপার। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, চুরির ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, চুরি রোধে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ১৩ জুন পাকসেনারা বহুল আলোচিত ‘অপারেশন খরচা খাতা’ পরিচালনা করে। তারা ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে সেখানে ট্রেন থামিয়ে নিরীহ মাড়োয়ারি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৩৩৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এ কারণে ৭১ সালের স্মৃতিচারণে স্বাধীনতার  ৪৩ বছর পরে সেখানে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে বদ্ধভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। এরপর থেকে সেখানে প্রতি বছর ১৩ জুন সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন। কিন্তু সেটি এখন অবহেলা আর অযত্নে পড়ে রয়েছে। পরিণত হয়েছে নেশাখোরদের আড্ডাখানায়।





সম্পর্কিত সংবাদ

  • সৈয়দপুরে নাশকতা মামলায় আ’লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান জুন গ্রেফতার 
  • কয়রায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক সভা
  • সৈয়দপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২টি পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাঁই
  • সৈয়দপুরে মহিলা দলের সাধারন সভা উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটি গঠণ 
  • কয়রা থানার ওসি জি এম ইমদাদুল হক খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত
  • কয়রায় যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্টের কার্যক্রম শুরু
  • কয়রায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১
  • পাইকগাছার আলোচিত নড়া নদীর ২য় খন্ডের দখল নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি; সংঘর্ষের আশঙ্কা পাইকগাছা ( খুলনা)  প্রতিনিধিঃ