এবি পার্টি পদযাত্রা করে ১০ দফা দিল
নিউজ ডেস্ক :: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ১০ দফা দাবি ও সতর্কতামূলক অঙ্গীকার নিয়ে পদযাত্রা করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টি। আজ সোমবার বিকেল ৪টায় এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে ১০ দফা দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, বি এম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় নেতা লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম মজুমদার, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এ বি এম খালিদ হাসান ও মহানগরী উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এতে সভাপতির বক্তব্যে মেজর মিনার বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। কাজেই জনগণের চাওয়া পাওয়ার দিকে এই সরকারকে প্রাধান্য দিতে হবে। ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিপ্লবের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ তৈরি। বৈষম্য নিরসনে আপসের কোনো সুযোগ নাই।
এবি পার্টির পক্ষ থেকে ১০ দফা তুলে ধরে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে তাকে জাতির প্রত্যাশ্যা পূরণ করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যার্থ হতে দেওয়া যাবে না। বিপ্লবী সরকারের ব্যার্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১) দেশ গঠনের মহা চ্যালেঞ্জ এখন ছাত্র-জনতার কাঁধে। এই চ্যালেঞ্জে সফল হতেই হবে। ধৈর্য, সহনশীলতা, ত্যাগ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে আসুন একযোগে কাজ করি।
২) ছাত্র-জনতার অসীম আত্মত্যাগ ও রক্তদানে যে বিজয় তা ধরে রাখতে হবে। না পারলে শহীদেরা আমাদের ক্ষমা করবে না। ব্যর্থতার জন্য অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পরিণতিও হতে পারে আওয়ামী লীগের অনুরূপ!
৩) ভারতীয় বিশেষ কিছু গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক পক্ষ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা বন্ধ করুন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ও সাম্প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টির অপচেষ্টা বন্ধুত্বের লক্ষণ নয়।
৪) মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ সকল ধর্মের আমরা সবাই বাংলাদেশি-বাঙালি। কেউ সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু নই। এখানে কোনো বৈষম্য বা পৃথক স্বত্ত্বাগত বিভাজনের সুযোগ নেই। জীবন দিয়ে হলেও আমাদের সবাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন রক্ষা করতে হবে।
৫) শেখ হাসিনা ও তার দোসররেরা অবৈধ ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে যে গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও নৃশংসতা চালিয়েছে অবিলম্বে তার সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
৬) গণঅভ্যুত্থানের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পুরো দায় শেখ হাসিনা ও তার আগ্রাসী খুনী-দোসরদের। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর যেকোনো প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডের দায় বর্তমান সরকার ও আন্দোলনকারী সকল পক্ষের। অবিলম্বে সরকার ও ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সমন্বিত পদক্ষেপে সর্বাত্মক জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭) পদস্থ যে কাউকে অপসারণ বা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মূলনীতি হতে হবে তার দ্বারা কৃত অপরাধ ও অন্যায্য, অন্যায়মূলক ভূমিকা। পক্ষান্তরে নতুন যেকোনো নিয়োগ বা পদায়নের ভিত্তি হতে হবে মেধা, দক্ষতা, সততা, পূর্ববর্তী অবৈধ সরকার দ্বারা বঞ্চিত ও অবহেলিত হওয়া এবং বিগত গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তার অবদান ও ভূমিকা।
৮) অন্তবর্তীকালীন সরকারের সামনে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ। ভঙ্গুর ও বিধ্বস্থ রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের অঙ্গীকার এবং যতদ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। যৌক্তিক কারণ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রলম্বিত হলে জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হবার ঝুঁকি তৈরি হয়। আশা করি সেদিকে সবাই সচেতন থাকবেন।
৯) গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষায় নিয়োজিত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল পক্ষ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানকে সফল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিন।
১০) দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা, সকল পর্যায়ের কল-কারখানা সচল রাখা, ব্যবসা বাণিজ্যে গতি সঞ্চালনসহ দেশের অর্থনীতিতে নতুন করে সংস্কার ও উদ্যম ফিরিয়ে আনতে সকলের সমন্বিত প্রয়াস জোরদার করতে হবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিজয় একাত্তর চত্বর থেকে সিঙ্গেল লাইন পদযাত্রা শুরু করে দলটি। যা রাজধানীর বিজয়নগর, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল মোড় ঘুরে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
পদযাত্রায় আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, আব্বাস খান নোমান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আব্দুল হালিম খোকন, গাজী নাসির, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, আহমেদ বারকাজ নাসির, কেফায়েত হোসেন তানভীর, যুবনেতা মাসুদ জমাদ্দার রানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুলতানা রাজিয়া, রুনা হোসাইন, আমেনা বেগম, শাহিনুর আক্তার শীলা, মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, রিপন মাহমুদ, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুর রব জামিলসহ পার্টির কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সম্পর্কিত সংবাদ
আইআরআই-এর প্রতিনিধি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত
৮ সেপ্টেম্বর রবিবার রাজধানী ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে ওয়াশিংটন ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই)-এর একটিবিস্তারিত…
ব্যারিস্টার রাজ্জাক এবি পার্টি ছাড়লেন
নিউজ ডেস্ক :: এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুরবিস্তারিত…